কলকাতা ব্যুরো: রবীন্দ্র সদন থেকে বেরিয়ে প্রায় একঘন্টা পথ হেঁটে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মরদেহ নিয়ে এসে শোক যাত্রা দাঁড়াল কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সরকারের প্রথম সারির নেতা- মন্ত্রীরা উপস্থিত হলেন। একই সঙ্গে বামফ্রন্টের বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তীরা সাক্ষী থাকলেন শেষযাত্রার।
রবীন্দ্র সদন থেকে কেওড়াতলা পর্যন্ত শোক যাত্রায় গোটা পথ গাইতে গাইতে এলেন শিল্পীরা একের পর এক রবি ঠাকুরের গান। কৌশিক সেনের মতো অভিনেতা আবৃতি করলেন সৌমিত্রর লেখা কবিতা। একইভাবে কেওড়াতলা শ্মশানে একের পর এক রবীন্দ্রসঙ্গীত শোকাবহ পরিবেশে একজন শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানালো কলকাতা। শ্মশানে ঢুকে এক জায়গায় কিছুটা কাছাকাছি চেয়ারে বসে পড়লেন একদিকে মুখ্যমন্ত্রী, অন্যদিকে বিমান বসুরা। সরকারের তরফে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দেওয়া হলো গান স্যালুট।
সৌমিত্রর দেহের অন্তিম লগ্নের যখন প্রস্তুতি চলছে, তখন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললেন বিমান বসু সহ অন্যান্য বাম নেতারা। তারা সৌজন্য সাক্ষাতের পড়ে গিয়ে সৌমিত্র বাবুর মেয়ে পৌলমীর সঙ্গেও কথা বলেন তারা। সেখানে তখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন পেশার মানুষরা। কেওড়াতলা শ্মশানে দেহ ঢোকার পরেই মূল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাইরে তখন অগণিত মানুষ ভিড় করেছেন। রাসবিহারী মোড় পর্যন্ত সেই ভিড়ে তখন ছড়িয়ে রয়েছেন নানা মানুষ। তাদের মধ্যে শিল্পী কলাকুশলী ছাড়াও বহু সাধারণ মানুষ রয়েছেন। সন্ধ্যে সাতটা বাজার সামান্য আগেই নিয়ে যাওয়া হয় চুল্লিতে।
দেহ যখন চুল্লিতে তোলা হয়েছে তখনও শ্মশানেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, পুলিশ কমিশনার থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা। রয়েছেন স্টুডিও পাড়ার মানুষেরা। শিল্পী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের দেহ অন্ত্যেষ্টির মধ্য দিয়ে শেষ হলো একটা যুগের।
কলকাতার সিনেমা জগতে শেষ আদ্যোপান্ত বাঙালিয়ানার অবসান হলো সৌমিত্রর বিদায়ে।