কলকাতা ব্যুরো: তৃণমূলের নাম করলেন না। মিনিট দশেকের বক্তব্যে ছিল না কোন নতুন ঘোষণা। কিন্তু তার ওই সামান্য সময়ের বক্তব্যেই নাম না করেও তৃণমূলকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। গোকুলনগর ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে বাছা বাছা শব্দ প্রয়োগে আর রবীন্দ্রনাথকে হাতিয়ার করে রাজ্যের শাসক দলকে নাম না করে দিয়ে দিলেন অনেক উত্তর।
শুভেন্দুর বক্তব্য, নন্দীগ্রামে ২০০৩ সাল থেকে তিনি আসছেন। এখানে তখন থেকেই আন্দোলন দানা বাঁধছিল। কাকে, কোথায়, কবে, তিনি উদ্ধার করেছিলেন, কার বেকারিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল সিপিএম, কাকে মেরে রাস্তায় ফেলে রেখে দিয়েছিল, তিনি গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ছিলেন– এমন নানা টুকরো টুকরো উদাহরণ তুলে, শেষমেশ তিনি বললেন ‘চেনা বামুনের পৈতা লাগে না’। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তার নন্দীগ্রামের এই সভা করা নিয়ে তৃণমূলের তরফে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তারই উত্তর দিলেন শুভেন্দু।
তিনি মঞ্চ থেকেই জানিয়ে দিলেন, ১৩ বছর ধরে এই শহীদ দিবস হচ্ছে। কারো নাম না করেই প্রশ্ন ছুড়লেন, মনে পড়েছে…. এখন মনে পড়েছে, ১৩ বছর হয়ে গেছে। এর পরেই শুভেন্দুর বক্তব্য, ভোটের আগে আসছেন, ভোটের পরেও আসবেন তো? রীতিমত কটাক্ষের সুরে ভাসিয়ে দিলেন প্রশ্ন। তার এই বক্তব্য যে আজ দুপুরেই তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে সভাকে ইঙ্গিত করে তা স্পষ্ট।
শুভেন্দু এদিন আরো এক জল্পনায় জল ঢেলে দেন। তার বক্তব্য, আমি এখানে দাঁড়িয়ে কি ঘোষণা করবো, সেজন্য কৌতূহল নিয়ে অনেকেই তাকিয়ে রয়েছেন। কিন্তু আমি এই পবিত্র মঞ্চ থেকে কোনরকম রাজনীতির কথা বলবো না। আমার চলার পথে কোথায় চড়াই, কোথায় উতরাই, কোথায় সমস্যা, তা আমি জানি। সেটা বলার জন্য এই মঞ্চ নয়।
ফিরহাদ হাকিম তার এই শহীদ দিবস পালন নিয়ে সরাসরি আপত্তি জানিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, শুভেন্দুর তৃণমূলের ডাকা ওই সভাতেই অংশ নেওয়া উচিত। কিন্তু শুভেন্দুর বক্তব্য, এই সভা গত ১৩ বছর ধরে চলছে। কেন এবার আলাদা সভা করার প্রয়োজন হলো? কিন্তু গোটা বক্তব্যে তিনি কোথাও কারোর নাম মুখে আনেন নি। বিশাল মঞ্চ আর সামনে হাজার হাজার মাথার ভিড়। মঞ্চে সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারি এবং শুভেন্দুকে নিয়ে তিনজন বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন। এদিন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ওই মঞ্চে এখনো যে বহু মানুষ বিচার পাননি সেই কোথাও ইঙ্গিতে উল্লেখ করে দেন শুভেন্দু।
আজ বিকেলেই নন্দীগ্রামের চৌরঙ্গী মোড়ে আবু তাহেরের নেতৃত্বে রাজনৈতিক সভা হবে। সেই সভায় থাকার কথা শুভেন্দু অধিকারীর। ফলে আর কয়েক ঘন্টা পরে সেই সভা থেকেই শুভেন্দু তাকে নিয়ে চলা জল্পনার অবসানে কিছু ঘোষণা করেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনা জিইয়ে থাকলো।