কলকাতা ব্যুরো: জট তৈরি হলেও, শেষ পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর পটাশপুর এর বিজেপি নেতা মদন ঘরুইয়ের লকআপে মৃত্যুতে দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখল হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিফ মেডিকেল অফিসার বা ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এর তত্ত্বাবধানে, তিন সদস্যের কমিটি গড়ে এই ময়না তদন্ত করতে হবে। ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফিও করতে হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ভিডিওগ্রাফি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে মুখ বন্ধ খামে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। পরবর্তীতে এসএসকেএম সহ যে সব হাসপাতালে মদন ঘরুই ভর্তি হয়েছিলেন সেখানে তার যাবতীয় মেডিকেল নথি তার পরিবারের আইনজীবীর হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর এর বিজেপি নেতা মদন ঘোরুই য়ের এক আত্মীয় অপহরণের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। পুলিশ তাকে না পেয়ে বাড়ি থেকে মদনকে তুলে আনে বলে অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। আদালত তাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এরই মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর তাকে কলকাতা এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পুলিশ নিয়ে আসে। কিন্তু সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
তার বাড়ির লোকের অভিযোগ মৃত্যুর দু’দিন পরে তাদের হাতে মৃতদেহ তুলে দেয় পুলিশ। তাদের অভিযোগ, অসুস্থ হয়ে নয়, পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে মদনকে। মৃতদেহ নিয়ে বিজেপি ১৬ অক্টোবর রাজ্য অফিস থেকে মিছিল বের করে। সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এর নেতৃত্বে বিজেপি ঐ দেহ নিয়ে কালিঘাটে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ধর্মতলা পেরোনোর আগেই তাদের পুলিশ আটকে দেয়। এরই মধ্যে বিজেপির আইনজীবীরা দ্বিতীয়বার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন।
বিচারপতি রাজা শেখার মন্থা শুনানির পর দেহের দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের অনুমতি দেন। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ওই দিনই রাতে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে রাজ্য সরকার। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের নির্দেশ সাময়িক স্থগিতাদেশ দেয়। ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি মন্থকেই নির্দেশ দেয়, নতুন করে মামলাটি শুনে রায় পুনর্বিবেচনার জন্য।
এদিন দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত মনে করেছে, পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে ময়নাতদন্তের যে সমস্ত বিধি রয়েছে তার অনেকটাই পালন করা হয়নি। পুনরায় দেহ ময়নাতদন্তের আগের নির্দেশ বহাল রাখে হাইকোর্ট।