কলকাতা ব্যুরো: দিল্লির কুচকাওয়াজ থেকে বাদ পড়েছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে তৈরি বাংলার ট্যাবলো। যা নিয়ে চরমে পৌঁছয় কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। চিঠি, পাল্টা চিঠির পরও বাংলার ‘নেতাজি’র ঠাঁই হয়নি দিল্লির রাজপথে। দেশের ৭৩ তম সাধারণতন্ত্র দিবসে সেই ট্যাবলোই প্রদর্শিত হল রেড রোডে। দর্শকাসন থেকে হাত জোড় করে সম্মান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
বুধবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ রেড রোডে পৌঁছে যান মমতা। হাজির হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। উভয়ের সৌজন্য সাক্ষাৎও হয়। এরপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাজ্যপাল। শুরু হয় কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান। কোভিডবিধির কথা মাথায় রেখে এবার ভিড় এড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তাই দর্শকদের প্রবেশের উপর জারি ছিল নিষেধাজ্ঞা। ভিআইপি সংখ্যাও ছিল কম। উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবও।
তবে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকতে পারল না প্যারেডের অনুষ্ঠানও। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এই প্রথমবার রেড রোডে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলেন না বিরোধী দলনেতা। যদিও কোভিডবিধির জেরেই এবার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের সংখ্যায় কাটছাঁট হয়েছিল। তবে এদিনও মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি শুভেন্দু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ক্যান্সারের ওষুধ বেরিয়েছে। কিন্তু হিংসার ওষুধ এখনও বেরোয়নি। যেহেতু আমার কাছে তিনি নন্দীগ্রামে হেরে বাড়ি গিয়েছেন এটা চিরদিন লেখা থাকবে। হেরেছি হেরেছি হেরেছি…
বুধবার প্রজাতন্ত্র দিবসে নন্দীগ্রামে টাউন ক্লাবের পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি কীর্তনীয়াদের কুড়িটি মৃদঙ্গ বিতরণ, কয়েকটি মন্দিরের সিসিটিভির উদ্বোধন তার পাশাপাশি মন্দিরের মাইক সেট বিতরণ অনুষ্ঠানে শামিল হন শুভেন্দু অধিকারী। প্রত্যেককে প্রজাতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুভেন্দু বলতে শুরু করেন, বহু জায়গায় শিলান্যাস হয় এবং তাতে শেওলা পড়ে। আমি অন্তত যেটা বলি করার চেষ্টা করি।
এদিন রেড রোডের মূল অনুষ্ঠানের জায়গা মোড়া ছিল কড়া নিরাপত্তার চাদরে। মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই শহরজুড়ে চলছে নজরদারি। বিভিন্ন রাস্তায় চলছে নাকা চেকিং। নিরাপত্তা আঁটসাট করতে রেড রোড সংলগ্ন এলাকাকে ১১ টি জোনে ভাগ করা দেওয়া হয়। প্রতি জোনের দায়িত্বে একজন করে ডিসি পদমর্যাদার অফিসার। রেড রোডে ৬টি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি হয়। মোতায়েন ৩টি কুইক রেসপন্স টিম। ছিল বিশেষ কন্ট্রোল পোস্টের ব্যবস্থা। শহরে ঢোকা ও বেরনোর প্রত্যেকটি পয়েন্টে চলে নাকা চেকিং।