কলকাতা ব্যুরো: সংসদের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। বাদল অধিবেশনে হট্টগোলের জেরে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করা হল মোট ১২ জন সাংসদকে। এদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের দুই রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন এবং শান্তা ছেত্রী। এছাড়াও রয়েছেন ৬ কংগ্রেস সাংসদ, এক সিপিএম সাংসদ, এক সিপিআই সাংসদ, এবং দু’জন শিব সেনা সাংসদ।
উল্লেখ্য, সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষদিন পেগাসাস ইস্যুতে রাজ্যসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিরোধী সাংসদরা। সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ করেন তাঁরা। সরকারপক্ষ তখন থেকেই এই সাংসদদের শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছিল। সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই অভিযুক্ত ১২ সাংসদের শাস্তির দাবিতে প্রস্তাব আনে সরকার পক্ষ। সেই দাবি মেনেই ১২ জন সাংসদকে গোটা শীতকালীন অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করা হলো।
সাসপেন্ড হলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী এবং দোলা সেন। কংগ্রেসের ৬ সাংসদ; ফুলো দেবী নেতাম, ছায়া বর্মা, রিপুন বরা, রাজমণি প্যাটেল, সৈয়দ নাসির হোসেন এবং অখিলেশ প্রসাদ সিংকেও গোটা শীতকালীন অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়াও সাসপেন্ড হয়েছেন শিব সেনার প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এবং অনিল দেশাই, সিপিএমের ই করিম এবং সিপিআইয়ের বিনয় বিশ্বম। শীতকালীন অধিবেশনে কোনও বিতর্কে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না এই ১২ জন।

তবে এভাবে বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড হওয়ার ঘটনা একেবারেই নতুন কিছু নয়। গত বাদল অধিবেশন থেকেই বিরোধী সাংসদদের আন্দোলন দমন করতে সাসপেনশনকে হাতিয়ার করে চলেছে সরকারপক্ষ। এর আগে লোকসভার বহু সাংসদকে হট্টগোলের জন্য সাসপেন্ড হতে হয়েছিল। রাজ্যসভাতেও বিরোধী সাংসদদের একাধিকবার সাসপেন্ড করেছে সরকার। তৃণমূলের যে দু’ জন সাংসদ শীতকালীন অধিবেশনে সাসপেন্ড হলেন, তাঁরাও বাদল অধিবেশন চলাকালীন সাসপেনশনের শিকার হয়েছেন। তবে এই সাসপেনশনের সিদ্ধান্তে বিরোধীরা যে ক্ষুব্ধ হবেন, তা বলাই বাহুল্য।
অভিযুক্ত সাংসদদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ না দিয়েই কিভাবে দলীয় সাংসদদের সাসপেন্ড করলো সরকার? সোমবার এমনই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। এই সাসপেনশনকে ‘অবৈধ’ বলে দাবি তাঁর।